ঋতু রঙ্গ
ঋতু রঙ্গ
দেবশ্রী চক্রবর্তী
বৈদিক শ্লোকের মতন বয়ে যায় কাল ,
চিরন্তন শাশ্বত বৈচিত্র্যের পরশ নিয়ে
ঐন্দ্রজালিক প্রভাবে সৃষ্টি হয় ঋতু রঙ্গ ;
কালের অভিশাপে আমি নির্বাশিতা রামগিরি পর্বতে ।
তুমি মেতেছ সৃষ্টির উল্লাসে তোমার সাজান রঙ্গমঞ্চে ,
বিরহ বিদির্ন ক্ষতের বিচিত্র রঙে আলপনা কাটা চিত্রপটে
নট নটিদের নৃত্যের মাঝে আবহ সংগীত বয়ে চলে আমার দীর্ঘশ্বাস ।
হু হু করে বয়ে যায় কাল আর কাল, চলমান ঘুর্নাবর্তে
আমার হা হা কারের তোমাকে ফিরে পাবার শেষ চেষ্টায়
আমি হাত রাখি স্রোতস্বিন নদের বুকে ।
আমাদের স্পর্শে ভেজা জল গ্রীষ্মের দাবানলে জ্বলে
তৈরি করে এক নবগঠিত সাহারা ।
আমার কম্পিত হৃৎপিণ্ডের কম্পনের তালে
বিরহ বিদীর্না বেদুইনের সুর এক অদ্ভুত মুর্ছনায়
অন্ধকারে সুফিয় মরু বালু থেকে ছায়া ছায়া জখমে
জাগ্রত করে উষ্ণ মরীচিকা ।
আমার কুটীরের চারপাশে শাল- বাগিচা ,
আমার শিয়োরে মরা চাঁদের পাশে রাখা
শাল পাতায় লেখা ঝুলন্ত কাব্যগ্রন্থ খানি,
তাঁকে ঘিরে মেঘ ভ্রমরের হাত ছানি ।
তোমাকে ছুঁয়ে আসা মেঘ বৃষ্টি হয়ে ঝরে রচনা
করে আমার শাল পাতার অমর কাব্যের ।
স্নায়ুর রেখা যেদিকে যায় বিচিত্র শিউলি রেখা গভীর কাশ বন,
ভেসেচলা মেঘবনি পরিখায় আমি ঢলে পরি ।
আমি জানি আমার কবর আর বেশি দূর নয় ,
বিসর্জনের কাঠাময় আমার চেতনা ভাসমান সেই পরিখায় ।
আর বেশি দূর নয় , কাকের ঠোঁটের থেকে ঝড়ে পড়া নবান্নের
ঘ্রাণ গায়ে মেখে শাল বনি কাব্যের ঝরাপাতার বিছানায়
আমি আশ্রয় নিই আমার কবরে ।
তুমি ভুল করে তোমার মেঘ তুলি খানি ফেলে গেছ কবরের পাশে ।
ঘুম না ভাঙ্ঘা বিরহিণী কি দেখতে পায় কালিদাস !
Comments
Post a Comment