প্রসঙ্গ জন্ম নিয়ন্ত্রণ
দেবশ্রী চক্রবর্ত্তী
একুশ শতাব্দীতে সবচেয়ে সংকটবহুল প্রতিক‚ল অবস্থার জন্ম দিতে চলেছে বিপুল জনসংখ্যার উদ্বেগজনক বিস্ফোরণ। কারণ এই শতাব্দীতেই বাস্তবায়িত হচ্ছে, হিউম্যান পপুলেশনের সর্ব বৃহৎ আকারলাভ। যার ভয়াল রূপ ইতোমধ্যেই পরিদৃশ্যমান হয়ে উঠেছে প্রাকৃতিক পরিবেশের বিপর্যয়ের ভেতর দিয়ে। ক্রমাগত দূষণের ফলে প্রতিক‚ল পারিপার্শ্বিকতায় নানান প্রজাতির বন্য প্রাণীর বিলুপ্তিসাধনের ইঙ্গিতে। বনাঞ্চল ধ্বংস হতে থাকায় উদ্ভিদ জগৎ ও উদ্ভিদনির্ভর জীবের অস্তিত্ব রক্ষার বিপন্নতায়। মানুষ ও প্রাণিকুলের খাদ্যাভাব এবং ব্যবহারযোগ্য জল সংকট সৃষ্টিতে। মানুষের নৈতিক আদর্শের অবমূল্যায়নে এবং তাদের মানসিক আচরণের বিস্তৃত অবক্ষয়ের চেহারা ছবির নমুনা ঘিরে। এটমোসফিয়ারিক বিজ্ঞানীরা এই বিপুল পরিবর্তনের সম্পর্ক সূত্রের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জনসংখ্যার অতিবৃদ্ধিকেই দায়ী করেছেন মূলত। কারণ পৃথিবীর ইকোলজিক্যাল সাপোর্ট সিস্টেম বিধিবদ্ধ নিয়মকানুন মেনে সুচারুরূপে তখনই ক্রিয়াশীল থাকতে পারে, যখন পারস্পরিক নির্ভরশীলতার অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনে মানবজাতির সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর অন্য সব প্রাণী, উদ্ভিদ জগৎ, জল-বায়ু-মাটি ইত্যাদি পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়গুলো (Biospheric Factors) তাদের পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার দ্বারা প্রত্যেকের নিজস্ব গণ্ডি থেকে ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়। এই বাস্তব চিত্র আজ একুশ শতাব্দীতে লক্ষ্যযোগ্য, জনসংখ্যার চাপে পৃথিবীর ইকোলজিক্যাল সাপোর্ট সিস্টেম বিধিবদ্ধ ভূমিকা পালন করতে ক্রমান্বয়েই ব্যর্থ হচ্ছে। পরিবেশবিদ ও জীববিজ্ঞানীরা রাশিরাশি তথ্যপ্রমাণ উপস্থিত করে ইতোমধ্যে তাই সরাসরিই জানিয়ে দিয়েছেন, বিপুল জনসংখ্যার প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঠেকাতে না পারলে জগতের অস্থিতিশীলতা প্রতিরাধ করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। তারা বলেছেন- ‘Earth is rapidly approching a tipping point! Human impacts are causing alarming levels of harm to this planet’! একটি চূড়ান্ত পর্যায়ের দিকে দ্রুতগতিতে অগ্রসর হয়ে চলেছে জীবের বাসযোগ্য পৃথিবী! আর এই গ্রহের আশঙ্কাজনক ক্ষতির স্তরগুলো সাধিত হয়ে চলেছে মানবজাতির কারণেই!
নবজাগরণের ফলে ইউরোপ আমেরিকার শিল্পবিপ্লবের জোয়ারে কৃষি, শিল্প, প্রযুক্তি, মেডিসিন, যাতায়াত ব্যবস্থায় প্রভূত উন্নয়নের স্পর্শ যখন লাগতে আরম্ভ করে, তখন থেকেই দ্রুতগতিতে বেড়ে চলেছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার। বৃদ্ধির এই হার বিজ্ঞান-প্রযুক্তির আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে কিভাবে দ্রুতগতিতে অগ্রসরতা পেয়েছে তার এক সংক্ষিপ্ত পরিসংখ্যান এখানে উপস্থাপন করা যেতে পারে। ইউনাইটেড নেশনস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী- ‘১৭৫০ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বে মোট জনসংখ্যা ছিল ৭৯১ মিলিয়ন। ১৮০৪-১৯২৭ = ১২৩ বছরে মোট পপুলেশন বেড়েছে একশ কোটি। ১৯২৭-১৯৫৯ = ৩২ বছরে ১০০ কোটি। ১৯৫৯-১৯৭৪ = ১৫ বছরে ১০০ কোটি। ১৯৭৪-১৯৮৭ = ১৩ বছরে ১০০ কোটি। ১৯৮৭-১৯৯৯ = ১২ বছরে ১০০ কোটি। ১৯৯৯-২০১১ = ১২ বছরে ১০০ কোটি’। ১৯৫০ সালে বিশ্বে মোট জনসংখ্যার পরিমাণ দুশ বাহান্ন কোটি ষাট লাখ (২৫২,৬০০০০০০)। ১৯৭০ সালে তিনশ ঊনসত্তর কোটি এগারো লাখ বাহাত্তর হাজার (৩৬৯,১১৭২০০০)। ১৯৯০ সালে পাঁচশ বত্রিশ কোটি আট লাখ ষোলো হাজার ছয়শ সাতষট্টি (৫৩২,০৮১৬৬৬৭)। ২০১০ সালে ছয়শ একানব্বই কোটি একষট্টি লাখ তিরাশি হাজার চারশ বিরাশি। ২০১৪ সালে সাতশ বত্রিশ কোটি সাতচল্লিশ লাখ বিরাশি হাজার দুশ পঁচিশ (৭৩২, ৪৭৮২২২৫)।
এ হেন পরিস্থিতিতে জন্মনিরোধের বিষয়টি কয়েকদিন ধরে মাথায় ঘোরাফেরা করছে । তাই আজ জন্মনিরোধের
বিষয়ে কিছু লিখতে চাই । একটা বিষয় ভীষণ ভাবে মাথায় ঘোরাফেরা করে যে প্রাচীনকালে কি জন্ম নিরোধক ছিল ?
অতীতে মানুষ কিভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করতেন ? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই আজ লিখতে বসা ।
নবজাগরণের ফলে ইউরোপ আমেরিকার শিল্পবিপ্লবের জোয়ারে কৃষি, শিল্প, প্রযুক্তি, মেডিসিন, যাতায়াত ব্যবস্থায় প্রভূত উন্নয়নের স্পর্শ যখন লাগতে আরম্ভ করে, তখন থেকেই দ্রুতগতিতে বেড়ে চলেছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার। বৃদ্ধির এই হার বিজ্ঞান-প্রযুক্তির আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে কিভাবে দ্রুতগতিতে অগ্রসরতা পেয়েছে তার এক সংক্ষিপ্ত পরিসংখ্যান এখানে উপস্থাপন করা যেতে পারে। ইউনাইটেড নেশনস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী- ‘১৭৫০ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বে মোট জনসংখ্যা ছিল ৭৯১ মিলিয়ন। ১৮০৪-১৯২৭ = ১২৩ বছরে মোট পপুলেশন বেড়েছে একশ কোটি। ১৯২৭-১৯৫৯ = ৩২ বছরে ১০০ কোটি। ১৯৫৯-১৯৭৪ = ১৫ বছরে ১০০ কোটি। ১৯৭৪-১৯৮৭ = ১৩ বছরে ১০০ কোটি। ১৯৮৭-১৯৯৯ = ১২ বছরে ১০০ কোটি। ১৯৯৯-২০১১ = ১২ বছরে ১০০ কোটি’। ১৯৫০ সালে বিশ্বে মোট জনসংখ্যার পরিমাণ দুশ বাহান্ন কোটি ষাট লাখ (২৫২,৬০০০০০০)। ১৯৭০ সালে তিনশ ঊনসত্তর কোটি এগারো লাখ বাহাত্তর হাজার (৩৬৯,১১৭২০০০)। ১৯৯০ সালে পাঁচশ বত্রিশ কোটি আট লাখ ষোলো হাজার ছয়শ সাতষট্টি (৫৩২,০৮১৬৬৬৭)। ২০১০ সালে ছয়শ একানব্বই কোটি একষট্টি লাখ তিরাশি হাজার চারশ বিরাশি। ২০১৪ সালে সাতশ বত্রিশ কোটি সাতচল্লিশ লাখ বিরাশি হাজার দুশ পঁচিশ (৭৩২, ৪৭৮২২২৫)।
এ হেন পরিস্থিতিতে জন্মনিরোধের বিষয়টি কয়েকদিন ধরে মাথায় ঘোরাফেরা করছে । তাই আজ জন্মনিরোধের
বিষয়ে কিছু লিখতে চাই । একটা বিষয় ভীষণ ভাবে মাথায় ঘোরাফেরা করে যে প্রাচীনকালে কি জন্ম নিরোধক ছিল ?
অতীতে মানুষ কিভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করতেন ? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই আজ লিখতে বসা ।
সমাজে প্রচলিত একটি প্রবাদ আছে, ‘জন্ম তো উপরওয়ালার হাতে’। তাহলে কী জন্ম নিয়ন্ত্রণ সকল প্রচেষ্টাই ব্যর্থ? বর্তমানে মানুষের চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখন আর কেউ আগের মতো করে ভাবে। এখন সকলেই সচেতন, সকলেই চায় ছোট এবং সুখী পরিবার গড়তে।
সমাজে জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্যকর অনেক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। তবে আজ থেকে প্রায় কয়েকশ বছর আগে জন্ম নিয়ন্ত্রণের এসব আধুনিক পদ্ধতি প্রচলিত ছিলো না। সেই সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণে ব্যবহার হতো অবৈজ্ঞানিক, অস্বাস্থ্যকর বিভিন্ন উপায়। এতে জন্মনিয়ন্ত্রণে সাফল্যের হার যেমন ছিল কম, তেমনি অস্বাস্থ্যকরও বটে।
লেবু: অতি পরিচিত লেবু এক সময়ে জন্ম নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হতো। ধারণা করা হতো সিটরাস এই ফলটি ডিম্বানুর বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। পুরুষেরা সম্পর্কে আগে লেবুর রস পুরুষাঙ্গে লাগিয়ে নিত। এটিকে কন্ডোমের আদি রূপ বলা যায়। তবে এক্ষেত্রে জন্ম নিয়ন্ত্রণ প্রতিরোধের হার শূন্য শতাংশ। অর্থাৎ এটি সম্পূর্ণ ব্যর্থ হওয়ায় ডাচেরা এই পদ্ধতি পরিত্যাগ করে।
পেঁপে: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে এখনো জন্ম নিয়ন্ত্রণে পেঁপে কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জন্মনিয়ন্ত্রণ এবং গর্ভপাতে কার্যকরী কাঁচা পেঁপে। বিশ্বাস করা হতো, পুরুষরা নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খেলে তারা উর্বরতা শক্তি হারাবে এবং এক পর্যায়ে শূন্যে পৌঁছাবে। আবার যখন পেঁপে খাওয়া বন্ধ করবে তখন পুনরায় সন্তান ধারণের ক্ষমতা ফিরে পাবে।
নেকড়ের মূত্র: মধ্যযুগে প্রচলিত জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হচ্ছে নেকড়ের মূত্র ব্যবহার। সংসর্গের ঠিক পর মুহূর্তেই নারীর যৌনাঙ্গে নেকড়ের মূত্র স্প্রের মাধ্যমে ছিটিয়ে দেয়া হতো। আশ্চার্য হলেও সত্যি এখনো অনেক জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়িতে নেকড়ে কিংবা গর্ভবতী ঘোড়ার মূত্র ব্যবহার করা হয়।
হাঁচি: হাস্যকর শোনালেও এই পদ্ধতিতে সাফল্যের হার দশ ভাগের একভাগ। সংসর্গের সবচেয়ে উপভোগ্য মুহূর্তে নারীকে হাঁটুতে ভর দিয়ে বসে নাক চেপে ধরে হাঁচি দিতে বলা হয়। ধারণা করা হয়, এর মাধ্যমে শরীর থেকে শুক্রানু বের হয়ে যাবে।
তেল এবং পারদের মিশ্রণ: প্রাচীন যুগে চীনে নারীদের খালি পেটে তেল এবং পারদের মিশ্রিত এক প্রকার পানীয় খাওয়ানো হতো। ধারণা করা হতো সংসর্গের সঙ্গে সঙ্গে অথবা তিন দিনের মধ্যে খালিপেটে এই পানীয় পান করতে সন্তান ধারণের সম্ভবনা থাকে না। এই পানীয় শুক্রানু ধ্বংস করে এবং কোনো ডিম্বানু থাকলে সেটিও ধ্বংস করে। যদিও জন্ম নিয়ন্ত্রণে এটি কার্যকরী এক উপায়। উর্বরতা নষ্ট করতেও এটি সহায়ক।
আদা-ভিনেগার দিয়ে স্নান: প্রাচীনকালে যেকোনো কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নারীদেরকে ঠেলে দেয়া হতো, এতে কোনো সন্দেহ নেই। নারীদের মাধ্যমে পরীক্ষিত জন্ম নিয়ন্ত্রণের আরেকটি পদ্ধতি হলো আদা-ভিনেগার দিয়ে স্নান। যৌন সংসর্গের পর নারীদের আদা-ভিনেগার মিশ্রিত গরম জল দিয়ে স্নান করতে বলা হতো। পানিতে বেশি পরিমাণে আদা এবং ভিনেগার মেশানো হতো। বাথটাব থেকে যতোক্ষণ না আদা এবং ভিনেগারের মিশ্রণ ধুয়ে যেতো, ততক্ষণ তাদের জলে বসে থাকতো হতো। বলা হতো, ওই মিশ্রনের সঙ্গেই নারীর দেহ থেকে শুক্রানু ধুয়ে যাবে
আধুনিক সমাজে কনডমের ব্যবহার ব্যাপক মান্যতা লাভ করেছে। যদিও যৌনশিক্ষা
পাঠক্রমে কনডমের ব্যবহার ইত্যাদি প্রসঙ্গে কনডম নিয়ে কিছু বিতর্কও সৃষ্টি হয়েছে।ইতিহাস ঊনবিংশ শতাব্দীর পূর্বে প্রাচীন সভ্যতাগুলিতে কনডমের
ব্যবহার প্রচলিত ছিল কিনা তা নিয়ে পুরাতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ বিদ্যমান। প্রাচীন মিশর, গ্রিস ওরোমে গর্ভাধান
রোধ নারীর দায়িত্ব হিসেবে পরিগণিত হত। এই সব দেশ থেকে সে সকল সুলিখিত প্রাচীন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিরবিবরণীগুলি পাওয়া গেছে, সেগুলিতে মূলত
নারী-নিয়ন্ত্রিতগর্ভনিরোধ বস্তুগুলিরই উল্লেখ রয়েছে। পঞ্চদশ শতাব্দীর পূর্বেকিছু শিশ্নাগ্র কনডমের ব্যবহারের
কথা জানা যায়; এগুলি প্রধানত পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগকে ঢেকে রাখত। মনে করা হয়, জন্মনিরোধক হিসেবেই কনডমের ব্যবহার
প্রচলিত ছিল এবং এই প্রচলন কেবলমাত্র সমাজের উচ্চশ্রেণির মানুষের মধ্যেই পরিলক্ষিত হত। চীনে শিশ্নাগ্র কনডম তৈরি হত তৈলনিষিক্ত
রেশমি কাগজ বা ভেড়ার অন্ত্র দিয়ে। জাপানে কনডম তৈরি হতকচ্ছপের খোলবা জন্তুর শিংদিয়ে।ষোড়শ শতাব্দীর ইতালিতে
গ্যাব্রিয়েলে ফ্যালোপিও সিফিলিস রোগের উপর একখানি গবেষণাগ্রন্থ রচনা করেন। সেই সময়কার লিখিত
ইতিহাস থেকে জানা যায় যে১৪৯০-এর দশকে সিফিলিস একটি
ভয়ানক রোগের আকারে প্রকট হয়েছিল। রোগাক্রান্ত হওয়ার
মাস কয়েকের মধ্যেই রোগীর মৃত্যু ঘটত। ফ্যালোপিওর গবেষণা গ্রন্থটি কনডম ব্যবহারের bপ্রাচীনতম অবিতর্কিত বিবরণ। এই বর্ণনা অনুযায়ী, একটি
ক্ষৌমবস্ত্রনির্মিত খাপকে একটি রাসায়নিক দ্রবণে ডুবিয়ে রাখা হত এবং ব্যবহারের পূর্বে সেটি শুকিয়ে নেওয়া হত। বর্ণনা অনুযায়ী এক কাপড়টি কেবলমাত্র শিশ্নাগ্রভাগকেই
ঢেকে রাখত এবং একটি রিবন দিয়ে এটিকে বেঁধে রাখা হত। ফ্যালোপিও দাবি করেন, ক্ষৌমবস্ত্রাকার খাপের একটি
পরীক্ষামূলক ব্যবহার ঘটিয়ে দেখেছেন যে এর মাধ্যমে সিফিলিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। এর পর থেকে সমগ্র ইউরোপে বিভিন্ন গ্রন্থে বর্ণিত নানা
রকম পুরুষাঙ্গ-আচ্ছাদনী রোগপ্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হতেথাকে। ১৬০৫ সালে রচিত Deiustitia et iure (বিচারও আইন
প্রসঙ্গে) নামে একটি ধর্মীয়পুস্তকের বক্তব্য থেকে অনুমিত হয়এই জাতীয় বস্তুগুলি রোগপ্রতিরোধের বদলে জন্মনিয়ন্ত্রক
হিসেবেই বেশি ব্যবহৃত হত। এইপুস্তকের লেখক ক্যাথলিকধর্মতত্ত্ববিদ লেওনার্দাসলেসিয়াস এগুলিকে অনৈতিকবলে বর্ণনা করেছেন। ১৬৬৬সালে ব্রিটিশ বার্থ রেট
কমিশনের বক্তব্য থেকে জানাযায় যে এই সময় “condons”ব্যবহারের ফলেজন্মহার হ্রাসপেয়েছে। এই শব্দটিই কনডমেরঅনুরূপ বানানবিশিষ্ট কোনো
শব্দের প্রথমউল্লেখ।ক্ষৌমবস্ত্রেরপাশাপাশিরেনেসাঁর যুগেঅন্ত্র ও মুত্রাশয় নির্মিত কনডমেরব্যবহারও প্রচলন লাভ করে। পঞ্চদশশতাব্দীর শেষভাগে ওলন্দাজ
বনিকেরা “ভাল চামড়া”নির্মিত কনডম নিয়ে যায়জাপানে। এই অঞ্চলে পূর্বেব্যবহৃত শিং-নির্মিত কনডম
শুধুমাত্র শিশ্নাগ্রভাগকেইঢাকত। কিন্তু এই সকল চামড়ারকনডমে সমগ্র পুরুষাঙ্গকে ঢাকারসুবিধা পাওয়া যেত।অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে আইনজ্ঞ,
ধর্মতত্ত্ববিদ ও চিকিৎসকদেরএকটি অংশ কনডম ব্যবহারেরবিরোধিতা করতে থাকেন।তাঁরা যে আপত্তিগুলি তোলেন,সেগুলির অনেকগুলি আজও
তোলা হয়ে থাকে: কনডমগর্ভাধান সম্ভাবনা কমিয়েদেয়, যাকে কেউ কেউ জাতিরপক্ষে অনৈতিক ও অবাঞ্ছিত
মনে করেন; এগুলি যৌনরোগথেকে সম্পূর্ণ রক্ষা করতে অক্ষম,অথচ এদের রোগপ্রতিরোধক্ষমতায় বিশ্বাস রেখে মানুষ
তাদের যৌন কার্যকলাপ বৃদ্ধিকরে থাকে; তাছাড়াঅনেকেইনানা ব্যবহারসংক্রান্ত সমস্যা, চড়া দাম ও
ব্যবহারের ফলে কামোদ্দীপনাকমে যাওয়ার জন্য কনডম ব্যবহারএড়িয়ে চলেন।কিন্তু কোনো কোনো মহলের
বিরোধিতা সত্ত্বেও কনডমেরবিক্রি বাড়তে থাকে। অষ্টাদশশতাব্দীতে বিভিন্ন মান ওআকারের কনডম কিনতে পাওয়া
যেত। এর মধ্যেযেমন রাসায়নিকমাখানো ক্ষৌমবস্ত্র নির্মিতকনডম ছিল, তেমনই ছিল “ত্বক”-ও(সালফার ও লাই মিশ্রিত নরম
করা মুত্রাশয় বা তন্ত্র)। সমগ্রইউরোপে ও রাশিয়ায় পাব,নাপিতের দোকান, ঔষধেরদোকান, খোলাবাজার এবংনাট্যশালায় কনডম বিক্রি হত।
পরে এগুলি আমেরিকাতেওবিক্রি হতে শুরু করে। তবেসর্বত্রই চড়াদাম ও যৌনশিক্ষারঅভাবগত কারণে কেবলমাত্রউচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণিরমধ্যেই কনডমের প্রচলন সীমাবদ্ধথাকে।
১৮০০ থেকে ১৯২০-এর দশকঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগেজন্মনিরোধক পদ্ধতিগুলির সঙ্গেসমাজের দরিদ্র শ্রেণি পরিচিতহয়। এই সময়কার জন্মনিরোধকসম্পর্কিত লেখকেরা
জন্মনিয়ন্ত্রণের অন্যান্যপদ্ধতিগুলিকেই বেশি গুরুত্বদিতেন। এযুগের নারীবাদীরাবলতেনজন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিএকান্তভাবেই নারীর হাতে
থাকা উচিত।
পরীক্ষামূলক ব্যবহার ঘটিয়ে দেখেছেন যে এর মাধ্যমে সিফিলিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। এর পর থেকে সমগ্র ইউরোপে বিভিন্ন গ্রন্থে বর্ণিত নানা
রকম পুরুষাঙ্গ-আচ্ছাদনী রোগপ্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হতেথাকে। ১৬০৫ সালে রচিত Deiustitia et iure (বিচারও আইন
প্রসঙ্গে) নামে একটি ধর্মীয়পুস্তকের বক্তব্য থেকে অনুমিত হয়এই জাতীয় বস্তুগুলি রোগপ্রতিরোধের বদলে জন্মনিয়ন্ত্রক
হিসেবেই বেশি ব্যবহৃত হত। এইপুস্তকের লেখক ক্যাথলিকধর্মতত্ত্ববিদ লেওনার্দাসলেসিয়াস এগুলিকে অনৈতিকবলে বর্ণনা করেছেন। ১৬৬৬সালে ব্রিটিশ বার্থ রেট
কমিশনের বক্তব্য থেকে জানাযায় যে এই সময় “condons”ব্যবহারের ফলেজন্মহার হ্রাসপেয়েছে। এই শব্দটিই কনডমেরঅনুরূপ বানানবিশিষ্ট কোনো
শব্দের প্রথমউল্লেখ।ক্ষৌমবস্ত্রেরপাশাপাশিরেনেসাঁর যুগেঅন্ত্র ও মুত্রাশয় নির্মিত কনডমেরব্যবহারও প্রচলন লাভ করে। পঞ্চদশশতাব্দীর শেষভাগে ওলন্দাজ
বনিকেরা “ভাল চামড়া”নির্মিত কনডম নিয়ে যায়জাপানে। এই অঞ্চলে পূর্বেব্যবহৃত শিং-নির্মিত কনডম
শুধুমাত্র শিশ্নাগ্রভাগকেইঢাকত। কিন্তু এই সকল চামড়ারকনডমে সমগ্র পুরুষাঙ্গকে ঢাকারসুবিধা পাওয়া যেত।অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে আইনজ্ঞ,
ধর্মতত্ত্ববিদ ও চিকিৎসকদেরএকটি অংশ কনডম ব্যবহারেরবিরোধিতা করতে থাকেন।তাঁরা যে আপত্তিগুলি তোলেন,সেগুলির অনেকগুলি আজও
তোলা হয়ে থাকে: কনডমগর্ভাধান সম্ভাবনা কমিয়েদেয়, যাকে কেউ কেউ জাতিরপক্ষে অনৈতিক ও অবাঞ্ছিত
মনে করেন; এগুলি যৌনরোগথেকে সম্পূর্ণ রক্ষা করতে অক্ষম,অথচ এদের রোগপ্রতিরোধক্ষমতায় বিশ্বাস রেখে মানুষ
তাদের যৌন কার্যকলাপ বৃদ্ধিকরে থাকে; তাছাড়াঅনেকেইনানা ব্যবহারসংক্রান্ত সমস্যা, চড়া দাম ও
ব্যবহারের ফলে কামোদ্দীপনাকমে যাওয়ার জন্য কনডম ব্যবহারএড়িয়ে চলেন।কিন্তু কোনো কোনো মহলের
বিরোধিতা সত্ত্বেও কনডমেরবিক্রি বাড়তে থাকে। অষ্টাদশশতাব্দীতে বিভিন্ন মান ওআকারের কনডম কিনতে পাওয়া
যেত। এর মধ্যেযেমন রাসায়নিকমাখানো ক্ষৌমবস্ত্র নির্মিতকনডম ছিল, তেমনই ছিল “ত্বক”-ও(সালফার ও লাই মিশ্রিত নরম
করা মুত্রাশয় বা তন্ত্র)। সমগ্রইউরোপে ও রাশিয়ায় পাব,নাপিতের দোকান, ঔষধেরদোকান, খোলাবাজার এবংনাট্যশালায় কনডম বিক্রি হত।
পরে এগুলি আমেরিকাতেওবিক্রি হতে শুরু করে। তবেসর্বত্রই চড়াদাম ও যৌনশিক্ষারঅভাবগত কারণে কেবলমাত্রউচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণিরমধ্যেই কনডমের প্রচলন সীমাবদ্ধথাকে।
১৮০০ থেকে ১৯২০-এর দশকঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগেজন্মনিরোধক পদ্ধতিগুলির সঙ্গেসমাজের দরিদ্র শ্রেণি পরিচিতহয়। এই সময়কার জন্মনিরোধকসম্পর্কিত লেখকেরা
জন্মনিয়ন্ত্রণের অন্যান্যপদ্ধতিগুলিকেই বেশি গুরুত্বদিতেন। এযুগের নারীবাদীরাবলতেনজন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিএকান্তভাবেই নারীর হাতে
থাকা উচিত।
porechi..valo legeche..ojana kichu janlam
ReplyDelete